অনলাইন সিকিউরিটি ? অনলাইনে নিরাপত্তায় আপনার যা করনীয় ?

 আজকে অনলাইনে secured থাকার কিছু উপায় বলছি।

১. মোবাইল নাম্বার দিয়ে অবস্থান শনাক্ত (track mobile number) : বাংলাদেশে মোবাইল নাম্বার দিয়ে অবস্থান শনাক্ত করা খুব কঠিন। এই ব্যাপারে android apps অনেক আছে কিন্তু সেগুলো বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য না। মোবাইলের আইপি বের করে তারপর অবস্থান শনাক্ত করা যায়। কিন্তু টিএন্ডটি নাম্বার দিয়ে আপনার বাসার ঠিকানা বের করে ফেলা যাবে। তাই কাউকে টিএন্ডটি নাম্বার দাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন।

২. IP (internet protocol) address দিয়ে অবস্থান শনাক্ত (trace ip address) : IP address দিয়ে খুব সহজেই আপনি কোথায় আছেন তা জানা যায়। তবে আইপি বের করা কিছুটা কঠিন। আপনাকে দিয়ে কোন লিংকে ক্লিক করিয়ে আইপি বের করে ফেলা সম্ভব। মোবাইল,কম্পিউটার সব কিছুর আইপি থাকে এবং আইপি বের করে অবস্থান জানা যায়। তবে মোবাইলে সিম দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করলে আইপি দিয়ে সঠিক অবস্থান অনেক সময় বের করা যায় না। এর থেকে সুরক্ষিত থাকার জন্য অনলাইনে কারো কোন লিংকে ক্লিক করবেন না। vpn (virtual private network) software ব্যবহার করলে আপনার আইপি change হয়ে যাবে এবং আপনার আইপি হ্যাক করলেও আপনি সুরক্ষিত থাকবেন।

৩. লিংকে ক্লিক করা (trap) : কারো কোন অপরিচিত লিংকে ক্লিক করলে আপনার আইপি হ্যাক করার মাধ্যমে আপনার অবস্থান শনাক্ত করা যাবে, আইপি দিয়ে আপনার ইন্টারনেট অচল করে দাওয়া যাবে, আপনার মোবাইল/কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকিয়ে দাওয়া যাবে, আপনার ডিভাইসের সব তথ্য চুরি করা যাবে, আপনার ফেসবুক আইডি হ্যাক করা যাবে। আরো অনেক কিছু করা যায় শুধু একটি লিংকে ক্লিক করিয়ে। তাই অনলাইনে সুরক্ষিত থাকতে চাইলে কারো দাওয়া কোন লিংকে ক্লিক করবেন না। কোন লিংকে ক্লিক করা খুব প্রয়োজন হলে http://www.whois.com ওয়েবসাইটে যেয়ে লিংকটি search করবেন। লিংকের ব্যাপারে details info পাবেন। সেখান থেকে বুঝতে পারবেন লিংকটি trusted কিনা।

৪. মোবাইল নাম্বার (misscall bombing) : আপনার মোবাইল নাম্বার দিয়েই আপনার মোবাইল নষ্ট করে ফেলা যাবে। এটি এভাবে করা হয়: মোবাইল নাম্বারে প্রতি সেকেন্ডে মিসকল দাওয়া হবে। ফলে এক ঘন্টায় প্রায় ৩০০০-৩৫০০ মিসকল আপনার নাম্বারে আসবে। এতে মোবাইলের ক্ষতি হবে। মোবাইল vibrate করা থাকলে মোবাইল নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এর থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে যখন এতো তারাতারি মিসকল আসতে থাকবে তখন মোবাইল বন্ধ করে দিবেন। মিসকল ধরার চেষ্টা করে লাভ নেই। খুব কম সময় মিসকল হবে এবং ধরার আগেই কেটে যাবে।

৫. SMS Bombing: মিসকলের মতোই খুব কম সময় প্রচুর SMS আপনার মোবাইলে পাঠিয়ে মোবাইল নষ্ট করে দাওয়া যাবে। মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে এর থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন।

৬. ইমেইল (email flooding) :আপনার ইমেইলে খুব অল্প সময়ে অন্য কোন ইমেইল থেকে অনেক অনেক ইমেইল পাঠিয়ে দাওয়া যাবে। ফলে আপনি আপনার দরকারি মেইল খুজে পাবেন না। ব্যবসায়িক ক্ষতি করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়। এর থেকে সুরক্ষিত থাকতে হলে যে কোন একটি মেইল select করে add to spam mail select করবেন। তাহলে এতোক্ষন আসা মেইল গুলো সব স্প্যাম মেইলে চলে যাবে। আপনার ইনবক্স ঠিক হয়ে যাবে।

৭. ইমেইল আইডি লুকিয়ে ইমেইল পাঠানো (email spoofing) : একটি উদাহরন দিচ্ছি। মনে করুন, আমি আপনাকে একটি ইমেইল আমার ইমেইল আইডি থেকে পাঠালাম। কিন্তু আপনি ইমেইলে আমার ইমেইল আইডি না দেখে অন্য কারো ইমেইল আইডি দেখলেন। ফলে অন্য ব্যক্তির সাথে আপনার ঝামেলা লেগে যাবে। এটিও সম্ভব। ইচ্ছা মতো ইমেইল থেকে মেইল পাঠানো। এক্ষেত্রে ইমেইল যার কাছ থেকে পেয়েছেন তার কাছে sure হয়ে নিবেন ইমেইলের ব্যাপারে।

৮. মোবাইল নাম্বার লুকিয়ে কল করা (call spoofing) : আমি আপনাকে কল দিলাম, কিন্তু আমার নাম্বার না দেখিয়ে আপনার মোবাইলে একটি বিদেশী নাম্বার দেখাচ্ছে। ফলে আপনি বুঝতে পারবেন না কে কল দিয়েছে আপনাকে। আপনি বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। যেই নাম্বার থেকে কল দিয়েছে সেটার country code দিয়ে কোন country এর নাম্বার বের করুন। যদি আপনার পরিচিত কেউ সেই দেশে না থাকে তাহলে বুঝে নিবেন এটি একটি prank call।

৯. মোবাইল নাম্বার লুকিয়ে SMS করা (sms spoofing) : এক্ষেত্রে মোবাইল নাম্বার লুকিয়ে বিদেশী নাম্বার থেকে SMS পাঠানো যায়। কে SMS পাঠিয়েছে আপনি বের করতে পারবেন না। এই ধরনের SMS গুলো অগ্রাহ্য করবেন। এসব SMS কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

১০. ফাইল ডাউনলোড (keylogger,virus etc) : অনলাইন থেকে কোন ফাইল ডাউনলোড করার আগে দেখে নিবেন trusted site থেকে ডাউনলোড করছেন কিনা। ফাইলের মধ্যে কীলগার, ম্যালওয়্যার, স্টীলার, ভাইরাস ইত্যাদি থাকতে পারে। ফলে আপনার ডিভাইস টি হ্যাক হয়ে যেতে পারে এবং আপনার সব তথ্য হ্যাকার পেয়ে যেতে পারে। সুরক্ষিত থাকার জন্য কম্পিউটার,মোবাইলে ভাল antivirus ব্যবহার করুন। ফাইলের মধ্যে কীলগার/ভাইরাস থাকলে antivirus তা delete করে দিবে।

আরো অনেক ভাবে আপনি হ্যাক হতে পারেন। এখানে কিছু টপিক নিয়ে আলোচনা করলাম। সময়ের অভাবে সব কিছু বলা সম্ভব হয়নি। সময় পেলে আরো লিখব।

অনলাইন সিকিউরিটি নিয়ে এতো কথা বলছি কারন বর্তমানে দেখি অনেকেই নানা রকম ভাবে হ্যাকড হচ্ছেন। অল্প কিছু সতর্কতার অভাবেই এটি হচ্ছে। অনেকেই জানেন না কিভাবে অনলাইনে সতর্ক থাকতে হয়। তাই এতো কিছু লিখলাম।

মূল কথা হচ্ছে কারো লিংকে ক্লিক করবেন না, যে কোন ফাইল ডাউনলোড করবেন না, সম্ভব হলে vpn ব্যবহার করুন, ভাল antivirus ব্যবহার করুন, সতর্ক থাকুন।

ধন্যবাদ……☺

This post is wtitten by: TAlha Islam

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *